যানজট নিরসনে এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে ময়মনসিংহ প্রশাসন। রোববার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে শহরের ব্যস্ততম গাঙ্গিনারপাড় ও রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বিশেষ টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে দেড় শতাধিক অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
সকাল ১১টা থেকেই জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স অভিযান শুরু করে। প্রথমে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালানো হকারদের জরিমানা করা হয়। এরপর দুপুরে স্টেশন রোডের নিউ হকার্স মার্কেটে বুলডোজার দিয়ে একের পর এক দোকান ভেঙে ফেলা হয়। মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যে মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হলে হঠাৎ এই অভিযানে হতভম্ব হয়ে পড়েন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
দোকান ভেঙে ফেলার পর আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেক হকার। দোকানি আব্দুল জলিল বলেন, “এই দোকানটাই ছিল সংসারের একমাত্র আয়ের উৎস। কোনো নোটিশ ছাড়াই সব ভেঙে দিল। এখন আমরা কোথায় যাব?”
আলী হোসেন নামে আরেক হকার বলেন, “১৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। লাখ টাকার মতো খরচ করেছি দোকান সাজাতে। আজ সব শেষ হয়ে গেল। অন্তত আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল।”
প্রশাসনের এ হঠাৎ অভিযানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়লেও সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাত ও রাস্তার বড় অংশ হকাররা দখল করে রাখায় যানবাহন চলাচল ও হাঁটা ছিল কষ্টসাধ্য।
পথচারী শরীফ আহমেদ বলেন, “এক কিলোমিটার রাস্তা পার হতে আধা ঘণ্টা লাগত। আজ উচ্ছেদের পর রাস্তাটা অনেক ফাঁকা মনে হচ্ছে।”
অন্যদিকে শিক্ষিকা লুৎফা বেগম বলেন, “ফুটপাত দিয়ে হাঁটার জায়গা ফিরেছে। এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।”
সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, “অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে এ অভিযান নিয়মিত চলবে। নগরীকে যানজটমুক্ত রাখতে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি।”
প্রশাসনের এই পদক্ষেপে একদিকে যেখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবিকা অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে, অন্যদিকে সাধারণ নাগরিকদের জন্য খুলে দিয়েছে স্বস্তির পথ।